চারঘাট প্রতিনিধি : চারঘাট উপজেলায় আইনের তোয়াক্কা না করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গা ঘেঁষে ইটভাটা তৈরি করা হয়েছে। এসব ইটভাটার ধোঁয়ায় গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে ইটভাটাগুলোর ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে। তবুও থেমে নেই ইট পোড়ানো।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আইন অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাহাড়, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এবং লোকালয় থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না। মিলবে না পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। এমনটাই বলা হয়েছে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩-তে। কিন্তু এই আইনের তোয়াক্কা না করে চারঘাট উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫০ গজের মধ্যে পাঁচতারা ব্রিকস ও ছয়তারা ব্রিকস এবং ২০০ গজের মধ্যে কেটিএ ব্রিকস, টিবিএফ ব্রিকস ও এনআরএ ব্রিকস স্থাপন করে নিয়মিত ইট পোড়ানো হচ্ছে।
এই পাঁচটি ইটভাটার পাশে তিনটি প্রাথমিক ও দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়া পরিবেশ আইন অমান্য করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যে আরও ছয়টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। তবে সব ইটভাটার ছাড়পত্র বাতিল করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। উপজেলার অনুপামপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ের ৫০ গজের মধ্যেই দুটি ইটভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ইটবাহী গাড়ির ধুলাবালি ও ভাটার ছাই-ধোঁয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে। এ অবস্থায় পাঠদান করানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।’
ছাড়পত্র না পেয়ে কীভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে অনুপামপুর পাঁচতারা ব্রিকসের মালিক শামসুল হক বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। স্থানীয়ভাবে সবাইকে ম্যানেজ করেই ভাটা চালাচ্ছি।’ উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিবার রহমান বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দেওয়া বন্ধ রয়েছে। এ কারণে অধিকাংশ ইটভাটার লাইসেন্স হচ্ছে না। কোটি টাকা খরচ করে ভাটা চালু করে এখন তো বন্ধ রাখা যাচ্ছে না।
আমরাও বেকায়দায় রয়েছি।’ পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সিনিয়র কেমিস্ট মিজানুর রহমান বলেন, ‘চারঘাটের ১১টি ভাটার সবই চলছে অবৈধভাবে।’ পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সুফিয়া নাজিম বলেন, ‘এই ভাটাগুলো পরিবেশের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। এসব অবৈধ ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোসহ নানা অনিয়ম আমাদের নজরে এসেছে। খুব দ্রুতই এগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply